র্যাব ৭ এর সিনিয়র সহকারী মিডিয়া পরিচালক মোঃ নুরুল আবছার বলেন, নিহত ভিকটিম শুকতারা এবং আসামী রাজন মিয়া গত ২০১২ সালের ২২ জানুয়ারি বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তাদের ঘরে দুটি সন্তান রয়েছে। ভিকটিমের স্বামী রাজন মিয়া দীর্ঘদিন যাবৎ মাদকাসক্ত ছিল। মাদক সেবনের টাকার জন্য সে ভিকটিমের সাথে প্রায়ই ঝগড়া বিবাদ ও মারধর করতো। ভিকটিম তার স্বামীকে টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে প্রায়ই তার স্বামী তাকে গালাগালি এবং মেরে ফেলার হুমকি দিত। এছাড়া ভিকটিমের শ্বশুর-শ্বাশুড়ী এবং দেবরও যৌতুকের টাকার জন্য তাকে গালমন্দ করতো।
এরই ধারাবাহিকতায় গত ১২ এপ্রিল রাত আনুমানিক ১১টার দিকে রাজন মিয়া টাকার জন্য ডেকসেটে উচ্চস্বরে গান বাজিয়ে তার শিশু সন্তানদের সামনে ভিকটিমকে মারধর শুরু করে। এক পর্যায়ে রাজন মিয়া মোটর সাইকেলের চেইন হাতে পেচিয়ে ভিকটিমের মুখে এলোপাতাড়ি ঘুষি মারতে থাকে। এ সময় ভিকটিমের শ্বশুর-শ্বাশুড়ী এবং দেবর ভিকটিমকে গালমন্দ ও মারধর করতে সহযোগিতা করে। পরবর্তীতে মধ্যে রাত ৩টার দিকে রাজন মিয়ার মা ভিকটিমের মাকে ফোনে জানায় ভিকটিম শুকতারা গুরুতর অসুস্থ্য তাকে তিতাস উপজেলা স্ব ্যাস্থ্ কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। ভিকটিমের বাবা তাৎক্ষণিক হাসপাতালে গিয়ে দেখেন ভিকটিম মৃত অবস্থায় হাসপাতালের বেডে পড়ে আছে এবং কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন।
উক্ত ঘটনায় ভিকটিমের মা বাদী হয়ে কুমিল্লা জেলার তিতাস থানায় ঘাতক স্বামী রাজন মিয়া এবং তার মা, বাবা ও ভাইকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন যার মামলা নং-১০/৪২, তারিখ-২৪ এপ্রিল ২০২৩খ্রিঃ, ধারা-৩০২/৩৪ পেনাল কোড। মামলা দায়েরের পর হতে বর্ণিত হত্যা মামলার আসামীরা আইন শৃংখলা বাহিনীর নিকট হতে গ্রেফতার এড়াতে এলাকা ছেড়ে আত্মগোপনে চলে যায়।
র্যাব-৭ আরও জানান, গৃহবধু শুকতারা হত্যা মামলার আসামীদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে গোয়েন্দা নজরধারী অব্যাহত রাখে। নজরধারীর এক পর্যায়ে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে যে, বর্ণিত হত্যাকান্ডের প্রধান আসামী ঘাতক স্বামী রাজন মিয়া চট্টগ্রাম মহানগরীর আকবরশাহ থানাধীন সি-ওয়ার্ল্ড পার্ক এলাকায় অবস্থান করছে।
উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-৭, চট্টগ্রামের একটি আভিযানিক দল গত ৭ জুন বর্ণিত স্থানে অভিযান পরিচালনা করে আসামী মোঃ রাজন মিয়া (৩০), পিতা- শুক্কুর আলী, সাং-মঙ্গলকান্দি, থানা-তিতাস, জেলা-কুমিল্লাকে আটক করতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে উপস্থিত সাক্ষীদের সম্মুখে আটককৃত আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদে সে বর্ণিত হত্যা মামলার এজাহারনামীয় ১নং পলাতক আসামী মর্মে স্বীকার করে।
গ্রেফতারকৃত আসামী সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের নিমিত্তে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।